ক্যান্সার বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, জরায়ুমুখ ও ব্রেস্ট ক্যান্সারসহ অন্যান্য ক্যান্সার থেকে বাঁচার জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় ও যথাযথ চিকিৎসা গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ক্যান্সার বিশেষঞ্জরা এ কথা বলেছেন।
তারা বলেন, বাংলাদেশের মতো অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশে ক্যান্সারে নারীদের মৃত্যুর মধ্যে জরায়ুমুখ ও ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হারই বেশি।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, বর্তমানে প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় এবং সময়মতো ও পূর্ণাঙ্গভাবে চিকিৎসা গ্রহণ করায় এই রোগে মৃত্যুর হার কমছে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (আরএমসিএইচ) রেডিওথেরাপি ও অনকোলজি বিভাগের সাবেক প্রধান অধ্যাপক ডা. দায়েম উদ্দিন বলেন, অসচেতনতা, বাল্যবিয়ে, সময়ের পূর্বেই শিশুর জন্মদান, কম বয়সে যৌন কার্যক্রম, যৌন রোগে আক্রান্তের ইতিহাস, নি¤œ আর্থ-সামাজিক অবস্থান ও যৌন সংগমের মাধ্যমে পরিবাহিত রোগ জরায়ুমুখ ক্যান্সারের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
এ ছাড়া বিলম্ব বিয়ে, চিরকুমারী, বুকের দুধ না খাওয়ানো, অতিরিক্ত মদ্যপান ও স্থ’ূল স্বাস্থ্য ব্রেস্ট ক্যান্সারের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানান তিনি।
অধ্যাপক দায়েম উদ্দিন বলেন, সচেতনতা সৃষ্টি, যৌনচার সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন, যৌন অনাচার না করা ইত্যাদি হচ্ছে জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধের প্রাথমিক দিক। আর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে পরবর্তী পর্যায়ের করণীয়।
আরএমসিএইচ-এর সহযোগী অধ্যাপক ও গাইনোকোলজি ও অবস্টেসরিকস বিভাগের প্রধান ডা. শাহেলা জেসমিন জানান, দেশে প্রতি বছরই প্রায় ১৩ হাজার নতুন জরায়ুমুখ ক্যান্সার ও প্রায় ১৫ হাজার নতুন ব্রেস্ট ক্যান্সারের রোগ ধরা পড়ে।
তিনি জানান, তার গাইনোকোলজি ওয়ার্ডে জরায়ুমুখ ও ব্রেস্ট ক্যান্সারের স্ক্রিনিং প্রোগ্রামে ক্লিনিকেল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়।
জরায়ুমুখ ও ব্রেস্ট ক্যান্সারকে নারীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ অভিহিত করে ডা. জেসমিন বলেন, নারীদের এই রোগের ব্যাপারে অনেক গুরুত্ব দিতে হবে।
তিনি বলেন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিনামূল্যে এসব রোগ নির্ণয় ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। গত কয়েক বছর যাবৎ ভিআইএ (ভায়া) কেন্দ্রের মাধ্যমে এ কার্যক্রম চলছে।
তিনি জানান, এই ভিআইএ কেন্দ্রে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ জন করে রোগী আসছে।
ডা. জেসমিন আরো বলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ দু’টি ক্যান্সারের ব্যাপারে জনসচেতনতা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
0 Comments