‘রেড মিট’ নয়, ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি হট ডগ-বার্গারে

হট ডগ কিংবা বার্গারের মতো খাবার যাদের প্রিয়, তাদের জন্য দুঃসংবাদ শুনিয়েছেন ক্যান্সার গবেষকরা।

তারা বলছেন, কেউ যদি প্রতিদিন ৫০ গ্রাম করে প্রক্রিয়াজাত মাংস খায়, তা তার পাকস্থলির (কলরেকটাল) ক্যান্সারের ঝুঁকি ১৮ শতাংশ বাড়ায়।

এতদিন ধরে রেড মিট বা গরু, ছাগল, ভেড়া কিংবা শুকরের মাংস খাওয়ায় ক্যান্সারের যে শঙ্কার কথা বলা হচ্ছিল, তাতে এখন অতটা ঝুঁকি দেখছেন না গবেষকরা।

ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সার (আইএআরসি) সোমবারই তাদের একটিরেড মিট প্রসেসড মিট নিয়ে চালানো একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।


ক্যান্সার গবেষকদের ফ্রান্সভিত্তিক এই সংস্থাটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিওএইচও) একটি অংশ। এই গবেষণায় ১০টি দেশের ২২ জন ক্যান্সার গবেষক কাজ করেন।

আইএআরসির গবেষণালব্ধ এই ফল ক্যান্সার ঝুঁকির কারণ হিসেবেরেড মিট নিয়ে চলমান বিতর্ক নতুন দিকে মোড় দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।

হট ডগ, বার্গারে ঝুঁকি বেশি

যে সব উপাদান পাকস্থলির ক্যান্সারের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি বাড়িয়ে দেয়; তার তালিকায় (গ্রুপ ) তামাক, অ্যাসবেস্টস, ডিজেলের ধোঁয়ার সঙ্গে এখন প্রক্রিয়াজাত মাংসকে যোগ করেছে আইএআরসি।

এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, “প্রক্রিয়াজাত মাংস খাবার হিসেবে গ্রহণ যে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়, গবেষণায় তার যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে।

অন্যদিকে রেড মিটকে রাখা হয়েছে নিচের (গ্রুপ ২এ) তালিকায়, এর সঙ্গে রয়েছে গ্লাইফসফেট।

রেড মিটকে নিচের তালিকায় রাখার মানে হল, এতে ক্যান্সারের ঝুঁকি তুলনামূলক কম।

আইএআরসির বিবৃতিতে বলা হয়, “রেড মিট গ্রহণ ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায় গবেষণায় এই রকম প্রমাণ অল্প প্রমাণই মিলেছে।

আইএআরসির গবেষক . কুর্ট স্ট্রাইফ বলেন, “ব্যক্তিবিশেষের ক্ষেত্রে এখনও প্রক্রিয়াজাত মাংস গ্রহণের কারণে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা কম। তবে এই ধরনের মাংস গ্রহণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ঝুঁকিও বাড়ছে।

গরুর এই মাংসে ঝুঁকি তুলনামূলক কম

বিশ্বের নানা দেশ তাদের স্বাস্থ্য নীতিতেরেড মিট গ্রহণকে নিরুৎসাহিত করছে।

গরু, ছাগল, ভেড়া, শুকরের মাংস খাওয়া সীমাবদ্ধ রাখার বিষয়ে আপত্তি নেই আইএআরসির। তারা বলছে, এই ধরনের পরামর্শ হৃদরোগ কিংবা স্থূলতার জন্য বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে দেওয়া যেতেই পারে।

তবে সেই সঙ্গে মনে রাখতে হবে, রেড মিটের পুষ্টিগুণ আছে। আমাদের গবেষণালব্ধ এই ফল বিভিন্ন দেশের সরকারকে ঝুঁকি বিবেচনা নিয়ে তাদের নীতি প্রণয়নে সহায়তা করবে বলে মনে করছি,”  বলেন আইএআরসি পরিচালক ক্রিস্টোফার ওয়াইল্ড।

গ্লোবাল বার্ডেন অফ ডিজিজ প্রজেক্টের এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, প্রক্রিয়াজাত মাংস গ্রহণের জন্য বিশ্বে প্রতি বছর ৩৪ হাজার মানুষ ক্যান্সারে মারা যায়।


বিপরীতে তামাক সেবনের কারণে প্রতিবছর ক্যান্সারে মৃত্যুর সংখ্যা ১০ লাখ। মদ পানের জন্য ক্যান্সারে ভুগে মারা যায় লাখ। বায়ু দূষণজনিত কারণে ক্যান্সারে মৃত্যুর সংখ্যা লাখ।

Post a Comment

0 Comments