শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ চোখ। প্রযুক্তির উন্নয়নে সময়ের সাথে তাল মেলাতে কম্পিউটার, ল্যাপটপ, মোবাইল ইত্যাদি ব্যবহারের কারণে শরীরের মহা মূল্যবান এ অঙ্গটির ওপর পড়ছে বাড়তি চাপ৷ হরহামেশা কপালে উঠে যাচ্ছে চশমা। তাই আসুন জেনে নিই চোখকে সুস্থ রাখতে পারে এমন কিছু খাবার সম্পর্কে।
সবুজ শাক-সবজি
স্বাস্থ্য সচেতন সবাই কম-বেশি জানেন যে, নিজেকে সবুজ বা তরুণ রাখার মূলমন্ত্র হলো সবুজ শাক-পাতা খাওয়া৷ চোখের স্বাস্থ্যের জন্যও প্রয়োজন সবুজ শাক-সবজি, কারণ এ সবে আছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আর লুটিন, যা কোনো নীল আলো বা লাইটকে চোখের রেটিনার ওপর প্রভাব ফেলা থেকে বিরত করে৷
মুরগির মাংস
মুরগির মাংসে রয়েছে প্রচুর জিঙ্ক এবং ভিটামিন ‘বি’, যা চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা রাখে৷ মুরগির মাংস নানাভাবে খাওয়া যেতে পারে৷ এমন কি ছোটরাও খেতে পারে এই মাংস৷
কমলালেবু
কমলালেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে লুটিন এবং ভিটামিন ‘সি’, যা চোখের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী৷ ভিটামিন ‘সি’ চোখের দৃষ্টি স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে৷
ডিমের কুসুম
ডিমের কুসুমের গুণের কথা কম-বেশি সবাই আমরা জানি৷ এতে রয়েছে লুটিন এবং যথেষ্ট পরিমাণে জিংক, যা চোখকে ‘মাসকুলার ডিজেনারেশন’ সমস্যা থেকে বাঁচায়৷ এ সমস্যা সাধারণত ৫০ বছর বয়সের পরে দেখা দেয়৷
ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড
যেসব মাছে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে, সেগুলো চোখের জন্য বেশ উপকারী৷ স্যামন, সার্ডিন, ম্যাকরেল, কড, টুনা – এ সব মাছ চোখের দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে এবং চোখকে নানা সমস্যা থেকে দূরে রাখে৷
প্রোটিন
শরীরে প্রোটিনের অভাব হলে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে৷ তাই মাছ, মাংস, দুধ ইত্যাদি খেতে হবে আর তা একেবারে ছোটবেলা থেকেই৷
রঙিন ফল ও সবজি
হলুদ, সবুজ, কমলা রঙের, অর্থাৎ গাজর, কমলা, পেঁপে, ক্যাপসিকাম, ভুট্টা ইত্যাদি বিভিন্ন রঙের ফলমূল ও শাক-সবজি, যেগুলোয় ভিটামিন ‘এ’ আছে, এমন খাবার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় থাকা উচিত৷ নিয়মিত এই কাজটি করলে চোখের স্বাস্থ্যের যত্ন নেয়া হবে৷
টমেটো
অতিরিক্ত আলোতে কাজ করার ফলে যে সমস্যা হয়, তা কমায় টমেটোয় থাকা লাইকোপিন৷ চোখের জন্য যা দরকার, যেমন আঁশ, খনিজ ক্যারোটিন – এ সবই রয়েছে রসালো টমেটোতে৷
বাঁধাকপি
বাঁধাকপি শীতকালীন সবজি। এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন ‘সি’ যা চোখের জন্য ভালো৷ বাঁধাকপি দামে সস্তা এবং সব জায়গায় পাওয়া যায়৷
গাজর
গাজরে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন, যা চোখের জন্য অত্যন্ত উপকারী। গাজর চোখের জ্যোতি বাড়ায় এবং ছানি পড়া রোধ করে। তাই ছোটবেলা থেকেই শিশুদের গাজর খাওয়ার অভ্যাস করা প্রয়োজন৷ তাছাড়া মিষ্টি আলুতেও রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন৷
চোখকে গুরুত্ব দিন
সুন্দর এই পৃথিবীতে আমরা সুন্দর, স্লিম আর সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য কত কী-ই না করি৷ অথচ অবহেলিত হয় আমাদের চোখ দুটো৷ চোখের বাহ্যিক সৌন্দর্যের জন্য কসমেটিক্সের কথা যেভাবে ভাবা হয়, চোখের ভেতরের স্বাস্থ্যের কথা সেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। এ কারণে অকালেই চোখের নানা সমস্যায় পড়তে হয়। প্রয়োজনীয় ভিটামিনযুক্ত খাবার নিয়মিত যথেষ্ট পরিমাণে খেলে চোখ থাকবে সুস্থ৷
সূত্র : ডয়চে ভেল
0 Comments