বাংলাদেশে দুই কোটির অধিক মানুষ কিডনি রোগে আক্রান্ত

বাংলাদেশে দুই কোটির অধিক মানুষ কিডনি রোগে আক্রান্ত। এই রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতি ঘণ্টায় অকাল মৃত্যুবরণ করছে পাঁচ জন।
আজ রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের ফ্রি কিডনি পরীক্ষা ও কিডনি সচেতনতা মূলক সেমিনারে ল্যাব এইড স্পেশালাইজড হাসপাতালের কিডনি বিভাগের চীফ কনসালটেন্ট ও ক্যাম্পস এর প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ডা. এম এ সামাদ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করতে গিয়ে এই কথা বলেন।
কিডনি এওয়ারনেস মনিটরিং অ্যান্ড প্রিভেনশন সোসাইটি (ক্যাম্পস) এই ফ্রি এর বিবিধ সেবা কার্যক্রমের বিশেষ অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন’-এর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই ফ্রি কিডনি স্ক্রিনিং ও কিডনি রোগ সম্পর্কে সচেতনতা মূলক সেমিনারের আয়োজন করে।



ক্র্যাব সভাপতি আবু সালেহ আকনের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) এর সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, সাধারণ সম্পাদক মুরসালিন নোমানী, ক্র্যাব সাধারণ সম্পাদক সরোওয়ার আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। দিন ব্যাপী চলমান ফ্রি স্ক্রিনিং কর্মসূচীর মাধ্যমে প্রায় ২০০ জন পেশাদার সাংবাদিক এর স্ক্রিনিং করা হয়।
অধ্যাপক এম এ সামাদ বলেন, সাধারণত ৭৫ ভাগ কিডনি নষ্ট হওয়ার আগে রোগীরা বুঝতেই পারে না যে, সে ঘাতক ব্যাধিতে আক্রান্ত। কিডনি রোগের চিকিৎসা এতোই ব্যয়বহুল যে, এদেশের শতকরা ১০ ভাগ লোকেরও সাধ্য নেই এই ব্যয় বহুল চিকিৎসা চালিয়ে যাবার। সচেতন হলে শতকরা ৬০ ভাগ ক্ষেত্রে ভয়াবহ কিডনি বিকল প্রতিরোধ করা সম্ভব।
তিনি বলেন, দেশে অসংক্রামক ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৬৩ ভাগ লোকের মৃত্যু হয়, আগামী ১০ বছরে এ হার ৭০ ভাগ ছাড়িয়ে যাবে, কারণ প্রতিবছর ২ ভাগ হাড়ে বৃদ্ধি পায়। সচেতন হলেই এবং লাইফ ষ্টাইল পরিবর্তনের মাধ্যমে ৫০ থেকে ৬০ ভাগ ক্ষেত্রে এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। বর্তমান বিশে^ ১০ জনের মধ্যে ১ জন কিডনি রোগী।
কিডনি রোগ প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক ভাবে ১০ টি স্বর্ণালী সোপান কঠিন ভাবে অবলম্বনের তাগিদ তৈরি হয়েছে জানিয়ে এম এ সামাদ বলেন, কায়িক পরিশ্রম ও খেলাধূলা এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা, ধূমপান থেকে বিরত থাকা, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ যাতে প্রতিদিন শাকসবজি ও ফল থাকবে, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা ও ফাষ্টফুড পরিহার করা, পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা, উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা, পরিচ্ছন্ন থাকা ও খাবার পূর্বে হাত ধোয়া, ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন ব্যাথা নাশক ও এন্টিবায়োটিক ঔষধ সেবন না করা, নিয়মিত কিডনির কার্যকারীতা পরীক্ষা করা।
তিনি আরো বলেন, বিশ্ব ব্যাপি আজ কিডনি রোগের ভয়াবহতা সংশ্লি¬ষ্ট সকলেই উপলব্ধি করতে পারছেন। তারা মনে করেন যে, চিকিৎসা করে নয় বরং প্রতিরোধ করেই এ রোগের প্রাদুর্ভাব প্রশমন করতে হবে। আর এ জন্য সচেতনতাই একমাত্র উপায়।

Post a Comment

0 Comments